এমনিতে প্যারানর্মাল বলে তাকেই যা কিনা আমাদের স্বাভাবিক বা নর্মাল যুক্তিগ্রাহ্য অভিজ্ঞতা বা বিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না।অর্থাৎ সোজা কথায় বলতে গেলে নানারকম ভূতুড়ে বা অদ্ভুতুড়ে কাণ্ডকারখানা, এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল জিনিসপত্তরই প্যারানর্মালের বিষয়বস্তু।আর এটাই হচ্ছে প্যারানর্মাল সাইকোলজি বা প্যারাসাইকোলজির চর্চার বিষয়।টেলিপ্যাথি থেকে শুরু করে ভবিষ্যতের জিনিস দেখতে পাওয়া,সাইকোকাইনেসিস বা বিশেষ ক্ষমতার বলে মানুষের শরীরকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা,পুনর্জন্ম বা আদৌ পুনর্জন্ম বলে কিছু হয় কিনা,এমনকি মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মানুষ যে সমস্ত অদ্ভুত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়—সেটাই প্যারাসাইকোলজির বিষয়বস্তু।

প্যারাসাইকোলজি ও বিজ্ঞান

ওপরে যে জিনিসগুলোর কথা বললাম,আমাদের বৈজ্ঞানিক যুক্তি-বুদ্ধিওয়ালা মন দিয়ে কিন্তু তার একটারও ব্যাখ্যা পাওয়া যাবে না।উল্টে বিজ্ঞান এগুলোকে অস্বীকারই করে।আর বিজ্ঞান যেগুলোকে অস্বীকার করে আজগুবি বলে উড়িয়ে দেয়,প্যারাসাইকোলজি সেটাকেই একভাবে স্বীকার করে নিয়ে তাকে তার চর্চার ক্ষেত্র করে তুলেছে।

প্যারাসাইকোলজি ও মেইন স্ট্রিম পড়াশোনা

প্যারাসাইকোলজি চর্চার শুরু কিন্তু নিতান্তই হাল আমলে।মোটামুটি ১৮৫৩ সালে রবার্ট হেয়ার প্রথম প্যারাসাইকোলজি নিয়ে গবেষণা করেন।এরপর যত দিন গেছে,এই নিয়ে চর্চার আগ্রহ মানুষের বেড়েছে।আর ভূত,অদ্ভুত নিয়ে মানুষের আগ্রহ তো চিরকালীন।যা সে জানে না,যার ব্যাখ্যা সে পায় না,তাকেই তো সে নানাভাবে জানতে,ভাবতে চায়।তাই যত দিন গেছে ভূতুড়ে-অদ্ভুতুড়ের মিশেলে এই প্যারাসাইকোলজিতে মানুষ নানা ভাবে মজেছে। তবে হ্যাঁ,মেইনস্ট্রিম বিজ্ঞানের শাখা যাকে বলে,তাতে কিন্তু প্যারাসাইকোলজি কোনোদিনই স্থান পায়নি।মানুষ বরং একে খানিক সন্দেহের দৃষ্টিতেই দেখে এসেছে।তাই মেইনস্ট্রিম বিজ্ঞানের চর্চায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনও প্যারাসাইকোলজি বিষয় হিসেবে স্থান পায়নি।এই নিয়ে যা টুকটাক কাজ,গবেষণা হয়েছে,সবই ব্যক্তিগত উদ্যোগে।আর সন্দেহের কারণও আছে।কারণ আজ পর্যন্ত এই প্যারাসাইকোলজি চর্চার ক্ষেত্রে ভুয়ো জিনিসপত্রের,ভাঁওতাবাজির অভাব হয়নি।ফ্রডনেসের দায়ে ধরা পড়েছেন একাধিক মানুষ।

তাই নানা অবিশ্বাস্য জিনিসের প্রতি যদি আপনার আগ্রহ থেকে থাকে, তাহলে কিন্তু প্যারাসাইকোলজি বা প্যারানর্মাল সাইকোলজিতে আপনি একজন রীতিমতো বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠার কথা ভাবতেই পারেন।নাই বা থাকলো সিলেবাস আর প্রথাগত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা।বইপত্র আর বিশেষজ্ঞের তো অভাব নেই।

তাই বলে বলা তো যায় না।আপনিই হয়তো প্যারাসাইকোলজির কোনো এক বিশেষ তত্ত্ব আবিষ্কার করে ফেললেন।তাই আগ্রহ থাকলে কিন্তু প্যারানর্মাল সাইকোলজি চর্চার কথা আপনিও ভেবে ফেলতেই পারেন।